নদীতে ফুল দিয়ে পাহাড়ে বিঝু- বিষু উৎসব শুরু

ছবি সংগৃহীত

 

বান্দরবানে চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের সাঙ্গু নদীতে ‘মা’ গঙ্গাকে ফুল নিবেদনের মধ্যদিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের সর্ববৃহৎ সামাজিক উৎসব বিঝু ও বিষু উৎসব শুরু হয়েছে।

 

শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সকালে সাঙ্গু নদীতে ‘মা’ গঙ্গাকে এ ফুল নিবেদন করে চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের হাজারো শিশু- নারী পুরুষ।

পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ১১টি সম্প্রদায়ের মধ্যে শুধু বম, লুসাই, পাংখোয়া তিনটি সম্প্রদায় ব্যতীত অন্য সকল সম্প্রদায় ভিন্ন ভিন্ন নামে এই বৃহৎ সামাজিক  উৎসব প্রতিবছর পালন করে থেকে।

 

চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় ১২ এপ্রিল ফুল দিয়ে নদীতে পূজা, শেষে ঘরদোর ফুল দিয়ে সাজায়, ১৩ এপ্রিল ঘরে ঘরে বিভিন্ন খানাপিনার আয়োজন করা হয়। এসময় একে অপরের বাড়িতে নিমন্ত্রণ ছাড়াই যেতে হয়। যদিও বা আধুনিককালে এখন অনেকে একে অপরকে নিমন্ত্রণ করে থাকে। ১৪ এপ্রিল বয়োজ্যেষ্ঠদেরকে গোসল করিয়ে তরুণ-তরুণরা আর্শীবাদ প্রার্থনা করে। উন্নত মানের খানাপিনার আয়োজন করে ঘনিষ্ট আত্মীয় স্বজন, এলাকার মুরুব্বী, বয়োজ্যেষ্ঠদেরকে ঘরে এনে খাওয়ানো হয়। বাড়িতে ভিক্ষু-সংঘকে ফাং করে বাড়ির লোকজনের মঙ্গলের জন্য মঙ্গল সুত্র শ্রবণ করে।

 

হ্যাপী চাকমা বলেন, প্রতিবছর ১২ এপ্রিল পুরাতন বছরকে বিদায় দিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানানো, গতবছর ভালো ছিলাম, আগামী বছরও ভালো থাকার আর্শীবাদ প্রার্থনা করে জল বুদ্ধ ও মা গঙ্গাকে ফুল দিয়ে পূজা করি সাঙ্গু নদীতে। এসময় সকলের মঙ্গল কামনা করি।

 

সুচিত্রা তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, নদীতে ফুল দিয়ে পূজা করা আমাদের ঐতিহ্য। প্রতিবছর ১২ এপ্রিল তিন পার্বত্য জেলায় ১১টি সম্প্রদায় উৎসব মুখর পরিবেশে বিষু উৎসব পালন করে থাকে। জল বুদ্ধকে, ‘মা’ গঙ্গাকে ফুল দিয়ে পূজা করে নিজের, পরিবারের তথা সকলের মঙ্গল কামনা করে নদীতে ফুল নিবেদন করে।

 

এদিকে, প্রতিটি ফোঁটা-ই হোক শান্তির দুত, পৃথিবী হোক শান্তিময় জলধারায়’ এই স্লোগানে আগামী শনিবার থেকে চারদিন ব্যাপী বান্দরবান পাহাড়ী অঞ্চলে শুরু হচ্ছে জলকেলী উৎসব বা মাহা: সাংগ্রাই পোয়ে:।

 

বুধবার স্থানীয় রেস্টুরেন্টের এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি মংমংসিং মারমা ও সাধারণ সম্পাদক উক্যসিং মারমা।

 

এবার বান্দরবানের সার্বিক প্রেক্ষাপটে এবারের বিঝু, বিষু, সাংগ্রাইং, বৈসু একটু ভিন্ন। গত ২ এপ্রিল ও ৩ এপ্রিল রুমা ও থানচি তে কেএনএফ কর্তৃক ব্যাংক ডাকাতি অস্ত্রলুটের ঘটনায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যৌথবাহিনীর সাোড়াশি অভিযান চলছে পাহাড় জুড়ে। সেজন্য রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়ি দুর্গম এলাকাগুলোতে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ কারণে বৈসাবি উৎসব আর তেমন উৎসবমুখর পরিবেশে উৎসব পালন করা হচ্ছে না।   সূএ:ঢাকা মেইল ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে কাজ করছেন: প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান

» রাজধানীতে বাসের ধাক্কায় এক ব্যক্তি নিহত

» খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের কল্যাণেও বেশ কিছু নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার- ধর্মমন্ত্রী

» দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর লক্ষ্মীপুরে বৃষ্টি নামলো

» যেকোনো মূল্যে নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জেলা প্রশাসক ড.বদিউর আলম

» বিশ্ব গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে জামালপুর জেলা প্রেসক্লাবের উদ্দ্যোগে কর্মশালা

» ফোনের বিরক্তিকর বিজ্ঞাপন বন্ধ করার উপায়

» নুসরাতের বুকে কার নামের ট্যাটু?

» সড়ক দুর্ঘটনায় দুই হেলপার নিহত

» আগামীকাল থেকে ২৫ জেলায় স্কুল-কলেজ-মাদরাসা বন্ধ

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

নদীতে ফুল দিয়ে পাহাড়ে বিঝু- বিষু উৎসব শুরু

ছবি সংগৃহীত

 

বান্দরবানে চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের সাঙ্গু নদীতে ‘মা’ গঙ্গাকে ফুল নিবেদনের মধ্যদিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের সর্ববৃহৎ সামাজিক উৎসব বিঝু ও বিষু উৎসব শুরু হয়েছে।

 

শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সকালে সাঙ্গু নদীতে ‘মা’ গঙ্গাকে এ ফুল নিবেদন করে চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের হাজারো শিশু- নারী পুরুষ।

পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ১১টি সম্প্রদায়ের মধ্যে শুধু বম, লুসাই, পাংখোয়া তিনটি সম্প্রদায় ব্যতীত অন্য সকল সম্প্রদায় ভিন্ন ভিন্ন নামে এই বৃহৎ সামাজিক  উৎসব প্রতিবছর পালন করে থেকে।

 

চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় ১২ এপ্রিল ফুল দিয়ে নদীতে পূজা, শেষে ঘরদোর ফুল দিয়ে সাজায়, ১৩ এপ্রিল ঘরে ঘরে বিভিন্ন খানাপিনার আয়োজন করা হয়। এসময় একে অপরের বাড়িতে নিমন্ত্রণ ছাড়াই যেতে হয়। যদিও বা আধুনিককালে এখন অনেকে একে অপরকে নিমন্ত্রণ করে থাকে। ১৪ এপ্রিল বয়োজ্যেষ্ঠদেরকে গোসল করিয়ে তরুণ-তরুণরা আর্শীবাদ প্রার্থনা করে। উন্নত মানের খানাপিনার আয়োজন করে ঘনিষ্ট আত্মীয় স্বজন, এলাকার মুরুব্বী, বয়োজ্যেষ্ঠদেরকে ঘরে এনে খাওয়ানো হয়। বাড়িতে ভিক্ষু-সংঘকে ফাং করে বাড়ির লোকজনের মঙ্গলের জন্য মঙ্গল সুত্র শ্রবণ করে।

 

হ্যাপী চাকমা বলেন, প্রতিবছর ১২ এপ্রিল পুরাতন বছরকে বিদায় দিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানানো, গতবছর ভালো ছিলাম, আগামী বছরও ভালো থাকার আর্শীবাদ প্রার্থনা করে জল বুদ্ধ ও মা গঙ্গাকে ফুল দিয়ে পূজা করি সাঙ্গু নদীতে। এসময় সকলের মঙ্গল কামনা করি।

 

সুচিত্রা তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, নদীতে ফুল দিয়ে পূজা করা আমাদের ঐতিহ্য। প্রতিবছর ১২ এপ্রিল তিন পার্বত্য জেলায় ১১টি সম্প্রদায় উৎসব মুখর পরিবেশে বিষু উৎসব পালন করে থাকে। জল বুদ্ধকে, ‘মা’ গঙ্গাকে ফুল দিয়ে পূজা করে নিজের, পরিবারের তথা সকলের মঙ্গল কামনা করে নদীতে ফুল নিবেদন করে।

 

এদিকে, প্রতিটি ফোঁটা-ই হোক শান্তির দুত, পৃথিবী হোক শান্তিময় জলধারায়’ এই স্লোগানে আগামী শনিবার থেকে চারদিন ব্যাপী বান্দরবান পাহাড়ী অঞ্চলে শুরু হচ্ছে জলকেলী উৎসব বা মাহা: সাংগ্রাই পোয়ে:।

 

বুধবার স্থানীয় রেস্টুরেন্টের এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি মংমংসিং মারমা ও সাধারণ সম্পাদক উক্যসিং মারমা।

 

এবার বান্দরবানের সার্বিক প্রেক্ষাপটে এবারের বিঝু, বিষু, সাংগ্রাইং, বৈসু একটু ভিন্ন। গত ২ এপ্রিল ও ৩ এপ্রিল রুমা ও থানচি তে কেএনএফ কর্তৃক ব্যাংক ডাকাতি অস্ত্রলুটের ঘটনায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যৌথবাহিনীর সাোড়াশি অভিযান চলছে পাহাড় জুড়ে। সেজন্য রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়ি দুর্গম এলাকাগুলোতে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ কারণে বৈসাবি উৎসব আর তেমন উৎসবমুখর পরিবেশে উৎসব পালন করা হচ্ছে না।   সূএ:ঢাকা মেইল ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com